Historyদ্বাদশ শ্রেণি

নৌবিদ্রোহ, ১৯৪৬ খ্রি. (Royal Indian Navy Revolt, 1946)

নৌবিদ্রোহ কি এবং কেন হয়েছিল, নৌ বিদ্রোহের কারণ কি, Royal Indian Navy Revolt, 1946, নৌ বিদ্রোহের কারণ, বিদ্রোহের সূচনা ও প্রসার

নৌবিদ্রোহ, ১৯৪৬ খ্রি. (Royal Indian Navy Revolt, 1946)

ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের সর্বশেষ উল্লেখযােগ্য আন্দোলন হল ১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দের ফেব্রুয়ারি মাসে ভারতীয় নৌবাহিনী অর্থাৎ রয়েল ইন্ডিয়ান নেভি (Royal Indian Navy বা RIN)-র বিদ্রোহ। ইতিমধ্যে ভারত ছাড়াে আন্দোলন, আজাদ হিন্দ বাহিনীর সংগ্রাম ইত্যাদি ঘটনার ফলে ব্রিটিশ সরকার দিশেহারা হয়ে পড়েছিল। ১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দের নৌবিদ্রোহ যেন ভারতে ব্রিটিশ শাসনের কফিনে শেষ পেরেকটি পুঁতে দিয়েছিল। ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের মহাবিদ্রোহের পরবর্তীকালে এই নৌবিদ্রোহই। ছিল ব্রিটিশদের কাছে সবচেয়ে ত্রাসের কারণ। ড. সুমিত সরকার এই বিদ্রোহকে ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের বিভিন্ন ঘটনার মধ্যে সবচেয়ে বীরােচিত বলে অভিহিত করেছেন।

কারণ

১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দে সাম্রাজ্যবাদী ব্রিটিশ সরকারের বিরুদ্ধে ভারতের নৌসেনারা যে বিভিন্ন কারণে বিদ্রোহ শুরু করেছিল সেগুলি হল—

(১). বর্ণবৈষম্য : ভারতীয় নৌবাহিনীতে প্রবল বর্ণবৈষম্য ছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ভারতীয় নাবিকরা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় যুদ্ধে গিয়ে দেখেন যে, কোনাে কাজে নিযুক্ত ভারতীয় নাবিক যে পরিমাণ বেতন ও সুযােগসুবিধা পায় সেই একই কাজে বা পদে নিযুক্ত থেকে ইংরেজ নাবিকরা ভারতীয়দের চেয়ে অনেক বেশি বেতন ও অন্যান্য সুযােগসুবিধা পায় ভারতীয় নাবিকরা এই বৈষ্যমের প্রতিবাদ করে কখনও প্রতিকার পায়নি।

(২). অন্যায় আচারণ : ব্রিটিশ সরকার এবং ইংরেজ নাবিকরা ভারতীয় নাবিকদের প্রতি বিভিন্ন অন্যায় আচরণ করত। ইংরেজ অফিসার ও নাবিকরা ভারতীয় নাবিকদের অশ্লীল ও অভদ্র ভাষায় গালিগালাজ করত। শুধু ভারতীয় হওয়ার অপরাধে ভারতীয় সেনাদের এসব লাচ্ছনা ভােগ করতে হত। ভারতীয় সেনারা ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষের কাছে বারংবার অনুরােধ করেও এসব ঘটনার কোনাে প্রতিকার পায়নি।

(৩). নিম্নমানের খাদ্য সরবরাহ : সরকারের বিরুদ্ধে ভারতীয় নৌসেনাদের অসন্তোষের অন্যতম কারণ ছিল তাদের‌ নিম্নমানের খাদ্য সরবরাহ। ইংরেজ অফিসার ও কর্মচারীরা যথেষ্ট ভালাে খাবার পেলেও সরকার ভারতীয় নাবিকদের অত্যন্ত নিম্নমানের খাবার দিত। তীব্র প্রতিবাদেও এর কোনাে সুরাহা না হওয়ায় তাদের মনে ক্ষোভ পুঞ্জীভূত হয়েছিল।

(৪). সেনাদের পদচ্যুতি : ১৯৩৯ খ্রিস্টাব্দে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হলে প্রচুর ভারতীয়কে নৌবাহিনীতে নিয়ােগ করা হয়। কিন্তু যুদ্ধের পর অতিরিক্ত সেনার প্রয়ােজন না থাকায় সরকার বহু সেনাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করে। এতে তারা বেকার হয়ে যায়। এর ফলে নৌবাহিনীতে ক্ষোভের সঞ্চার হয়।

READ ALSO  কে বাঁচায় কে বাঁচে প্রশ্ন এবং উত্তর (Question and Answer). HS

(৫). বিশ্ব-পরিস্থিতি সম্পর্কে ধারণাড : দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ভারতীয় নৌসেনারা বিদেশের বিভিন্ন রণাঙ্গনে যুদ্ধ করতে গিয়ে বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন পরিস্থিতি সম্পর্কে অভিজ্ঞতা লাভ করে। বিদেশের পরিস্থিতির দ্বারা ভারতীয় সেনারা প্রভাবিত হলে এদেশে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে তাদের ক্ষোভ বৃদ্ধি পায়।

(৬). অজাদ হিন্দ সেনাদের বিচার : সুভাষচন্দ্র বসুর নেতৃত্বে আজাদ হিন্দ বাহিনীর সংগ্রাম ভারতীয় নৌসেনাদের খুবই অনুপ্রাণিত করেছিল। আজাদ হিন্দ বাহিনীর আত্মত্যাগ এবং ভারতের স্বাধীনতার জন্য এই বাহিনীর সংগ্রাম ভারতের নৌসেনাদের নতুন দিশা দেখায়। পরাজিত আজাদ হিন্দ বাহিনীর সৈন্যদের লাল কেল্লায় বিচার শুরু হলে দেশের জনগণের সঙ্গে ভারতীয় নৌসেনারাও ক্ষোভে ফেটে পড়ে। নৌবিদ্রোহের তদন্ত কমিশনের রিপাের্টে নৌবিদ্রোহের কারণ হিসেবে আজাদ হিন্দ ফৌজের প্রভাবের কথা উল্লেখ করা হয়।

বিদ্রোহের সূচনা ও প্রসার

বিভিন্ন ঘটনায় ক্ষুদ্ধ হয়ে ভারতীয় নৌসেনারা ব্রিটিশ সরকারের বিরুদ্ধে ১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দে বিদ্রোহ শুরু করে।

(১). বিদ্রোহের সূত্রপাত: ১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দের ১৮ ফেব্রুয়ারি বােম্বাইয়ের তলােয়ার’নামক একটি জাহাজে প্রথম নৌবিদ্রোহ শুরু হয়। এই জাহাজের ১৫০০ নাবিক অত্যন্ত নিম্নমানের খাদ্য গ্রহণে অস্বীকার করে। বিদ্রোহী ভারতীয় নাবিকরা ব্রিটিশ পতাকা ইউনিয়ন জ্যাক নামিয়ে জাহাজে ত্রিবর্ণরঞ্জিত ভারতীয় পতাকা উত্তোলন করে এবং রয়েল ইন্ডিয়ান নেভি’র নাম রাখে ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল নেভি। বিদ্রোহীরা জানিয়ে দেয় যে, জাতীয় নেতৃবৃন্দ ছাড়া অন্য কারও আদেশ তারা মানবে না।

(২). বিদ্রোহের প্রসার: তলােয়ার জাহাজের বিদ্রোহের পর শীঘ্রই বােম্বাইয়ের আরও ২২টি জাহাজে নাবিকরা বিদ্রোহ শুরু করে। ক্রমে করাচি, কলকাতা, মাদ্রাজ, কোচিন, জামনগর, চট্টগ্রাম, বিশাখাপত্তনম, আন্দামান দ্বীপপুঞ্জ প্রভৃতি স্থানে বিদ্রোহের আগুন ছড়িয়ে পড়ে। ইংরেজ ভারত ছাড়াে’ ধ্বনিতে বিদ্রোহীরা মুখরিত হয়। করাচিতে ব্রিটিশ
জাহাজে অগ্নিসংযােগ করা হয়। ইংরেজ সেনাবাহিনী বিদ্রোহী নৌসেনাদের ওপর গুলি চালালে বিদ্রোহীরাও তার পালটা জবাব দেয়। বিদ্রোহীরা কয়েকটি ইংরেজ জাহাজ ও নৌবাহিনীর অস্ত্রাগারও দখল করে নেয়। বােম্বাই শহরে কয়েকদিনের জন্য ইংরেজ শাসন লােপ পায়। পুনাতেও ব্রিটিশ শাসন বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে।

(৩). সর্বদল সমন্বয় : বিদ্রোহী নৌসেনারা কংগ্রেস, মুসলিম লিগ, কমিউনিস্ট পার্টি প্রভৃতি দলের পতাকা নিয়ে রাস্তায় মিছিল বের করে। তারা শ্লোগান তােলে—“জয়হিন্দ’, ইনকিলাব জিন্দাবাদ’, ‘ইংরেজ ভারত ছাড়াে’, ‘ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদ নিপাত যাক’, ‘হিন্দু-মুসলিম এক হও’ প্রভৃতি। বিদ্রোহ পরিচালনার জন্য কেন্দ্রীয় ধর্মঘট কমিটি গঠিত হয়।

READ ALSO  আমি দেখি কবিতার MCQ - উচ্চ মাধ্যমিক বাংলা

(৪). বিদ্রোহীদের সমর্থন : দেশের ছাত্রসমাজ ও সাধারণ মানুষ বিদ্রোহীদের সমর্থন করে। বিদ্রোহীদের সমর্থনে ২২
ফেব্রুয়ারি বােম্বাইয়ে সর্বাত্মক ধর্মঘট পালিত হয়। ১০ লক্ষ শ্রমিক এই ধর্মঘটে শামিল হয়। শােভাযাত্রায় পুলিশ গুলি চালালে বােম্বাইয়ের রাজপথ ও ডক অঞ্চলে জনতা-পুলিশ রক্তাক্ত সংঘর্ষ চলে। বিদ্রোহীরা ইম্পিরিয়াল ব্যাংকের বিভিন্ন শাখা, ডাকঘর, পুলিশ ফাঁড়ি প্রভৃতি আক্রমণ করে। সেনাবাহিনীর ৪০টি লরি তারা জ্বালিয়ে দেয়। সংঘর্ষে প্রায় ৩০০ লােক নিহত এবং ২ হাজার লােক আহত হয়।

(৫). সরকারি দমননীতি: ইংরেজ নৌসেনাপতি অ্যাডমিরাল গডফ্রে বিদ্রোহী সেনাদের হুমকি দেন যে, তারা আত্মসমর্পণ না করলে বিমান থেকে বােমা ফেলে বিদ্রোহীদের ধ্বংস করা হবে। কিন্তু এতেও বিদ্রোহীরা ভয় পায়নি। বিদ্রোহী নৌসেনাদের ওপর সরকার গুলি চালানাের নির্দেশ দিলে স্থলবাহিনীর সেনারা সরকারি নির্দেশ অগ্রাহ্য করে। ২১ ফেব্রুয়ারি বিদ্রোহী সেনাদের ওপর ব্রিটিশ সেনাবাহিনী ঝাপিয়ে পড়ে। সাত ঘণ্টা ধরে দুপক্ষের লড়াইয়ে বােম্বাইয়ের
রাজপথ রক্তাক্ত রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।

বিদ্রোহের সমাপ্তি ও ব্যর্থতা

অল্প সময়ে নৌবিদ্রোহ তুমুল আলােড়ন সৃষ্টি করলেও
শেষপর্যন্ত ব্যর্থতার মধ্য দিয়ে এই বিদ্রোহের অবসান ঘটে।

(১). জাতীয় নেতাদের বিরােধিতা : বিদ্রোহীরা আশা করেছিল যে, তারা জাতীয় নেতৃবৃন্দের সহযােগিতা পাবে, কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি। কংগ্রেসের অনেক নেতাই নৌবিদ্রোহীদের সমর্থন করেননি। জওহরলাল নেহরু, বল্লভভাই প্যাটেল, আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ কংগ্রেস নেতা বিদ্রোহীদের সমালােচনা করে। প্যাটেল বলেন যে, নৌবিদ্রোহ হল ‘অরাজকতা, একে এখনই বন্ধ করা দরকার তিনি আরও বলেন, “সেনাবাহিনীর শৃঙ্খলাভঙ্গ বরদাস্ত করা যায় না। স্বাধীন ভারতেও আন্দ্রে সেনা প্রকার হবে।”গান্ধিজি বলেন যে, ইংরেজদের ব্যবহার পছন্দ না হলে নাবিকরা পদত্যাগ করুক। তাঁর মতে, ভারতের পক্ষে এই বিদ্রোহ ছিল একটি অশুভ ও অশােভন দৃষ্টান্ত’ (bad and unbecomingexample)। জিন্না এবং লিয়াকৎ আলি খানও বিদ্রোহীদের আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন। সম্ভবত তাঁরা জাতীয় আন্দোলনের নেতৃত্ব নিজেদের হাত থকে বেড়িয়ে যেতে পারে, সেই আশঙ্কায় শঙ্কিত ছিলেন।

(২). আত্মসমর্পণ : শেষপর্যন্ত একদিকে বিমান থেকে সম্ভাব্য বােমাবর্ষণের আশঙ্কা এবং অন্যদিকে বিদ্রোহ বন্ধ করতে হেরে বেশভাগ নেতার উপদেশে কারণে বিদ্রোহীরা আত্মসমর্পণ করে।

(৩). মধ্যস্থতা: নেতা সর্দার ভাই প্যাটেল হার ও বিদ্রোহী পন্থে মধ্যে মধ্যস্থতা করেন। সে নতাত্তে হস্তক্ষেপে অধিকাংশ বহে মুক্তি পায়। এভাবেই অনেক আশা জাগিয়ে শুরু হওয়া নৌবিদ্রোহ ব্যর্থতার হদিস হয়।

গুরুত্ব

১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দের ভারতীয় নৌসেনাদের বিদ্রোহ শেষপর্যন্ত ব্যর্থ হয়েছিল। কিন্তু বিভিন্ন পণ্ডিত ভারতের তৎকালীন পরিস্থিতিতে নৌবিদ্রোহের নানা গুরুত্বপূর্ণ দিক তুলে ধরেন। ঐতিহাসিক রজনী পামদত্ত, হীরেন্দ্রনাথ মুখােপাধ্যায়, সুমিত সরকার, গৌতম চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ ১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দের নৌবিদ্রোহের উচ্চ প্রশংসা করেছেন। রজনী পামদত্ত বলেছেন, “নৌবিদ্রোহ ছিল ভারতের ইতিহাসে নবযুগের সূচনাকারী।” ড. সুমিত সরকার বলেছেন, “এই বীরােচিত সংগ্রাম ভারতের ইতিহাসে অনেকাংশে এক বিস্মৃত অধ্যায় হলেও আজাদ হিন্দ ফৌজের মুক্তিযুদ্ধের চেয়েও তা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।”অধ্যাপক গৌতম চট্টোপাধ্যায় নৌবিদ্রোহকে ‘Almost Revolution’ বলে অভিহিত করেছেন। ১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দের নৌবিদ্রোহের যে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দিক ছিল সেগুলি হল—

READ ALSO  গঙ্গাস্তোত্রম্ অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন এবং উত্তর (Sanskrit QNA) HS

(১). ব্রিটিশ শাসনের অবসান ঘোষণা: নৌবিদ্রোহ যে ভারতে ব্রিটিশ শাসনের মৃত্যুঘণ্টা বাজিয়ে দিয়েছিল তাতে সন্দেহ নেই। ভারতীয় সেনাদের ওপর নির্ভর করে আর যে ভারত শাসন করা সম্ভব নয়, এ কথা ব্রিটিশ সরকার স্পষ্ট বুঝতে পারে। এক কথায়, এই বিদ্রোহ ভারতে ব্রিটিশ শাসনের অবসান ঘােষণা করে।

(২). মন্ত্রী মিশনের আগমন: রজনী পামদত্তের মতে, নৌবিদ্রোহের ফলে আতঙ্কিত ইংরেজ সরকার শান্তিপূর্ণ উপায়ে ক্ষমতা হস্তান্তরের জন্য কংগ্রেস ও মুসলিম লিগের সঙ্গে আলােচনা করতে মন্ত্রী মিশনকে ভারতে পাঠায়। ১৮ ফেব্রুয়ারি নৌবিদ্রোহ শুরু হয় এবং পরের দিন ভারতে মন্ত্রী মিশন পাঠানাের কথা সরকারিভাবে ঘােষণা করা হয়।

(৩). ভারত ত্যাগের ভাবনা: কোনাে কোনাে ঐতিহাসিক বলেন, নৌবিদ্রোহে ভারতীয় সেনা ও সাধারণ মানুষের রক্ত এক অভিন্ন আদর্শে একসঙ্গে মিশে যায়। ভারতে এরূপ আরও একটি বিদ্রোহ শুরু হলে তার পরিণাম যে কী ভয়ংকর হবে। তা বুঝতে পেরে ব্রিটিশ সরকার শীঘ্রই ভারত ত্যাগের কথা ভাবতে শুরু করে।

মুল্যায়ন » নৌবিদ্রোহের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দিক থাকা সত্ত্বেও কোনো কোনাে পণ্ডিত ও ঐতিহাসিক এর সমালােচনা করেছেন এবং বিদ্রোহের বিভিন্ন সীমাবদ্ধতার উল্লেখ করেছেন। অমলেশ ত্রিপাঠী, সুচেতা মহাজন প্রমুখ ঐতিহাসিকদের মতে, নৌবিদ্রোহ সাধারণ জনমানসে বিশেষ ছাপ ফেলতে পারেনি। আজাদ হিন্দ বাহিনীর সেনাদের মুক্তির দাবিতে কলকাতায় তীব্র আন্দোলন হলেও নৌবিদ্রোহ নিয়ে তেমন কোনো আলােড়ন হয়নি। গ্রামাঞ্চলেও এই বিদ্রোহের কোনাে প্রভাব পড়েনি। তা ছাড়া নৌবিদ্রোহ শুরু হওয়ার বেশ কিছুদিন আগে (২২ জানুয়ারি, ১৯৪৬ খ্রি.) ব্রিটিশ মন্ত্রীসভা ভারতে মন্ত্রী মিশন পাঠানাের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছিল বলে তারা জানান। অবশ্য কিছু সমালােচনা সত্ত্বেও এ কথা নিঃসন্দেহে বলা যায় যে, ভারতীয়দের হাতে শাসনক্ষমতা হস্তান্তরের বিষয়ে ব্রিটিশ সরকারের সিদ্ধান্ত নৌবিদ্রোহের দ্বারা কিছুটা হলেও প্রভাবিত হয়েছিল।

রংপুর বিদ্রোহ ১৭৮৩ (The Rangpur Uprising)

নেতাজী ও আজাদ হিন্দ-বাহিনী – Netaji and Azad Hind-forces

Related Articles

Leave a Reply

Back to top button
WP Radio
WP Radio
OFFLINE LIVE